বাংলাদেশে চলবে ইলেকট্রিক গাড়ি

0
678

দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার চালু করতে চায় সরকার। মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশবান্ধব সবুজ শক্তির ব্যবহার বাড়াতে এবং উৎপাদিত বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিতে এই গাড়ির ব্যাপক প্রচলনের কথা ভাবছে বিদ্যুৎ বিভাগ। দেশজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে চার্জিং স্টেশন স্থাপনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বর্তমানে চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হয়েছে বাংলাদেশের। এই বিদ্যুতের অধিকাংশ ব্যবহার হচ্ছে বাড়ি-ঘর ও শিল্প কারখানায়। তাই উৎপাদিত বিদ্যুতের নানামুখী ব্যবহার বাড়াতে ইলেকট্রিক গাড়ি চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে অবশ্য আরও আগেই ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার শুরু হয়। পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী যান হিসেবে সারা বিশে^ এই গাড়ির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ফলে এই গাড়ি চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশও পেট্রল বা ডিজেলের মতো ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমিয়ে আনতে চায়। জ্বালানি তেলের তুলনায় ইলেকট্রিক গাড়ির খরচ কম। এ গাড়ির চলার গতির সক্ষমতাও বেশি। এটি চালাতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ পড়বে মাত্র ৫০ পয়সা। সরকার আশা করছে, চালু করতে পারলে দ্রুতই এ গাড়ির ব্যবহার বাড়বে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো ইতোমধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার শুরু করেছে। আমাদের দেশেও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী হয়েছে। ফলে আমাদের উৎপাদিত

বিদ্যুতের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তবে ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যাপক আকারে চালু করতে সারাদেশে স্থাপন করতে হবে চার্জিং স্টেশন। তাই আমরা বৈদ্যুতিক যানবাহনের চার্জিং নীতিমালা গ্রাহকবান্ধব করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জেলায় চার্জিং স্টেশন স্থাপনের জন্য কাজ করছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতোমধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানি এবং বিক্রির পাশাপাশি জনপ্রিয়তা বাড়াতে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করছে সরকার। গত ১২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বৈদ্যুতিক গাড়ি চলাচলের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই গাড়ি আমদানি এবং অন্যান্য বিষয়ে কাজ করবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। আর ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন করে দেবে বিদ্যুৎ বিভাগ। চাইলে বাসা বাড়ির বৈদ্যুতিক লাইনেও এগুলো চার্জ করা যেতে পারে। কিন্তু একবার রাস্তায় নামলে সেটি আর সম্ভব নয়। ফলে রাস্তায় থাকতে হবে চার্জিং স্টেশন। তাই বিদ্যুৎ বিভাগ চার্জিং স্টেশন করবে আর গাড়ি আমদানি এবং বাজারজাতের উদ্যোগ নেবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে অন্য সব মোটরগাড়ির বিক্রি যেখানে কমেছে, সেখানে ইলেকট্রিক গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। ইউরোপের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীন এবং ভারত বৈদ্যুতিক গাড়ি রাস্তায় নামানোর উদ্যোগ নিয়েছে জোরেশোরে।

জানা গেছে, বিশে^ ইলেকট্রিক গাড়ির একচেটিয়া বাজার দখল করে রেখেছে ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা। তাদের সব শেষ প্রযুক্তির গাড়িতে একবার চার্জে ৩০০ মাইল অবধি যাওয়া সম্ভব। এ ধরনের গাড়ি মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে স্টেশনে চার্জ করা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here