আট মাসে রফতানি কমেছে ৪.৭৯ শতাংশ

0
334

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস থেকে প্রবৃদ্ধির যে নেতিবাচক ধারা চালু হয়েছিল, আট মাস শেষেও তা কাটিয়ে ওঠা যায়নি। অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি আট মাসে বিশ্ববাজারে ২ হাজার ৬২৪ কোটি ১৮ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ২ হাজার ৭৫৬ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ১৩২ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার ডলারের রফতানি কম হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল হালনাগাদ রফতানি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। ইপিবির হিসাবে চলতি অর্থবছরের আট মাসে রফতানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রফতানির নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির এ ধারা শুরু হয়, আট মাস শেষেও যা অব্যাহত আছে।

গত পাঁচ অর্থবছরের প্রথমার্ধের রফতানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি বছরই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারায় ছিল রফতানি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০১৬-১৭-তে প্রবৃদ্ধি হলেও তা আগের অর্থবছরের চেয়ে কমে হয় ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ২০১৭-১৮-তে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয় দুই অংকের, ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের আট মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ইতিবাচক। জুলাইয়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। জুলাই-আগস্ট দুই মাসে শুরু হয় নেতিবাচক ধারা। ওই দুই মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ। তিন মাস শেষে প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। অর্থবছরের পাঁচ মাস শেষেও রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এরপর চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধি হয় ঋণাত্মক ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

রফতানি খাতের শীর্ষ তিন পণ্য হলো পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত এবং পাট ও পাটজাত পণ্য। অর্থবছরের ছয় মাসের পরিসংখ্যান বলছে, পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি বাড়লেও কমেছে পোশাক এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি। তবে দেশের মোট রফতানির ৮৪ শতাংশ অবদান রাখা পণ্য পোশাকের রফতানি কমার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক রফতানিতে।

ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আট মাস শেষে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। চামড়াজাত পণ্যের রফতানি কমেছে ৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এদিকে প্রধান পণ্য পোশাক চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রফতানি হয়েছে ২ হাজার ১৮৪ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয় ২ হাজার ৩১২ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাক। এ হিসাবে পোশাক রফতানি কমেছে ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

মাসভিত্তিক রফতানি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রফতানি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। এ সময়ে যথাক্রমে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক ১১ দশমিক ৪৯, ৭ দশমিক ৩, ১৭ দশমিক ১৯ ও ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ডিসেম্বরে রফতানি প্রবৃদ্ধি কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরে হয়েছে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে আবারো নেতিবাচক ধারায় ফিরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে আবারো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার হার ঋণাত্মক ১ দশমিক ৮ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here