কাগজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি

0
329

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের মুদ্রণ, প্রকাশনা ও প্যাকেজিং শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছে এ খাতের ৬ ব্যবসায়ী সংগঠন। গতকাল শনিবার রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ভরসা, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত, বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুর রহমান পর্বত, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান, চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল এবং মেট্রোপলিটন প্রেস ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খান উজ্জল। তারা জানান, দেশের মুদ্রণ প্রকাশনা ও প্যাকেজিং শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, আর্ট কার্ড, সুইডিস বোর্ড, ফোল্ডিং বক্স বোর্ড এবং সেলফ অ্যাডহেসিভ পেপারের বিপুল চাহিদা থাকলেও এসব পণ্যের আমদানিতে সর্বেোচ্চ হারে শুল্ক বিদ্যমান রয়েছে। এর ফলে বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামাল খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে অবৈধ্য ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বড় অঙ্কের রাজস্ব। পাশাপাশি প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন- বন্ডের কাগজ চোরাচালান ও চোরাকাবারির সঙ্গে জড়িতদের দায়-দায়িত্ব আমরা নেব না। আমরা দেশীয় বিকাশমান কাগজ শিল্পের সুরক্ষা চাই। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দেশে কাগজের শিল্প গড়ে তুলেছেন। পাশাপাশি আমরা বন্ডের কাগজ আমদানি ও ব্যবহারের ওপর সরকারের কঠোর নজর দেখতে চাই। বন্ডের কাগজ কীভাবে বন্দর থেকে খালাস হয়ে খোলা বাজারে যাচ্ছে, সেটা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব কাস্টমসের। তার মতে প্রতি বছর ৫ লাখ টন কাগজ আমদানি হয়, যা মোট চাহিদার ১০ শতাংশ। শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, উচ্চ হারে শুল্ক থাকায় এ শিল্পের ব্যবসায়ীরা অব্যাহতভাবে লোকসানের মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, কাঁচামাল হিসেবে ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, আর্ট কার্ড, সুইডিস বোর্ড, ফোল্ডিং বক্স বোর্ড এবং সেলফ অ্যাডহেসিভ পেপারের বিপুল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই পণ্যগুলো দেশে উৎপাদন হয় না। কিছু কাগজের মিল-কারখানা রয়েছে, যারা শুধু কাঁচামাল হিসেবে সেগুলোতে শুধু ছাপা ও লেখার কাগজ, নিউজপ্রিন্ট, মিডিয়া ও লাইনার পেপার, সিগারেট পেপার, টিস্যু পেপার ও নি¤œমানের বোর্ড উৎপাদন করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য দেশীয় শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে যে হার বিদ্যমান আছে, মুদ্রণ শিল্পেও সেই হারে শুল্ক আরোপ করে কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেয়ার জন্য আহবান জানান ভরসা। শহীদ সেরনিয়াবাত বলেন, ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের কারণে মুদ্রণ, প্রকাশনা ও প্যাকেজিং শিল্পের প্রধান কাঁচামাল আমদানিতে চ‚ড়ান্তভাবে করভার হয় ৬০.৭৩ শতাংশ। ফলে যারা শূন্য শুল্কে বন্ড সুবিধার আওতায় একই ধরনের পণ্য আমদানি করে ২০-৩০ শতাংশ মুনাফা ধরে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেন। এতে ব্যবসায়ীরা অসুস্থ প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে দেশে উৎপাদিত কিছু কাগজ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি-সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, রপ্তানিকৃত কাগজের মূল্য ৭০ হাজার টাকা প্রতি টন। অথচ এর চাইতে নিম্নমানের কাগজও দেশীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৯০-৯৫ হাজার টাকা প্রতি টন। পেপার মিলগুলো যে হারে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভ্যাট, ট্যাক্স প্রদান করছে আর যে দামে উৎপাদিত কাগজ বিক্রি করছে তার ব্যবধান অনেক বেশি।

Source – Bhorer Kagoj.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here