অনলাইনে কেনা কোরবানির পশুতে কোনো ত্রুটি পেলে ফোনে বা ই–মেইলে ই-ক্যাবের কাছে অভিযোগ করা যাবে। অভিযোগ গ্রহণের তিন কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগের সুরাহা করবে ই-ক্যাব।
অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রেখে ২০২১ সালের ঈদুল আজহা অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই–কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। গত সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক কর্মশালার মাধ্যমে অনলাইনে পশু বিক্রয়ের নির্দেশিকার খসড়া প্রস্তাব করে ই-ক্যাব। খসড়াটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
কয়েক বছর ধরেই অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির বাজার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গেল বছর করোনার আগমনে অনলাইনে পশু কেনার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এ বছর আবার করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ঈদুল আজহায় অনলাইনে পশু বিক্রি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে ই-ক্যাব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনলাইন পশু বিক্রেতাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে শুধু ই-ক্যাব, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন সদস্যদের পশু বিক্রির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য কোনো অথবা অন্য কোনো অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের সদস্যরা অনলাইনে পশু বিক্রি করতে পারবেন না। অনুমতি পাওয়া বিক্রেতাদের তথ্য ডিজিটাল হাট কর্তৃপক্ষের কাছে নথিভুক্ত থাকবে, যেখানে বিক্রেতার ট্রেড লাইসেন্সের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর যুক্ত থাকতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) হাফিজুর রহমান জানান, অনলাইন হাটে নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পশু বিক্রি করবে। তারা কৃষক বা খামারিদের থেকে পশু সংগ্রহ করবে। কোনো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে এখানে যুক্ত করা হবে না।
ডিজিটাল হাটের খসড়া নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্রেতার কাছে পাঠানো পশু ত্রুটিযুক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতাকে একই দামের আরেকটি পশু দিতে হবে। এ ছাড়া বিক্রেতা যথাসময়ে পশু সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে পশুর দামের দ্বিগুণ অর্থ ক্রেতাকে দিতে বাধ্য থাকবে।
কেনা পশুতে কোনো অনিয়ম দেখলে ক্রেতা ফোন বা ই-মেইলের মাধ্যমে ই-ক্যাবে অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগ গ্রহণের সর্বোচ্চ তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বা বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং ই-ক্যাব সমন্বিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দোষী চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে।
খসড়া নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, অনলাইনে কেনা পশুর ডেলিভারির দায়িত্ব বিক্রেতার। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে কোনো অতিরিক্ত টাকা দাবি করতে পারবে না। এমনকি অন্য জেলা থেকে পশু ডেলিভারি করার ক্ষেত্রে, পরিবহনের সময় পশুর কোনো ক্ষতি হলে তার দায় বিক্রেতাকে নিতে হবে।
ই-ক্যাবের সভাপতি (সেক্রেটেরি জেনারেল) আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, যেহেতু হাট অনলাইনে হবে তাই এই ক্ষেত্রে ক্রেতাকে কোনো হাসিল দিতে হবে না। তবে অনলাইন বা মোবাইলের মাধ্যমে কেনাকাটা করা হলে সে খরচ ক্রেতাকে বহন করতে হবে। ডিজিটাল হাটে কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক ট্রান্সফার ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু কেনা যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয়বারের মতো এ বছর ডিজিটাল হাট আয়োজন করতে যাচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন অনলাইন বিচ্ছিন্নভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গরু বিক্রি করত। গত বছরের ডিজিটাল হাটে অন্তত ২৭ হাজার কোরবানি পশু বিক্রি হয়েছে। এ বছর অন্তত ৫০ হাজার পশু বিক্রি হবে বলে আশা করছে ই-ক্যাব।