ছোটো উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন প্রণোদনার প্রস্তাব সিপিডির

0
368

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে সমাজে চাহিদা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সে জন্য নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের প্রস্তাব দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তবে দেশে রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত অনেক কম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিদেশি উৎস থেকে সহজ শর্ত এবং অল্প সুদে ঋণ নিতে পারে।

বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা বিষয়ে ভার্চ্যুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আজ এসব কথা বলেছে সিপিডি।

প্রণোদনা প্যাকেজ এত দিন পর্যন্ত যা বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তাতে বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলো লাভবান হলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প লাভবান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এদের লক্ষ্য করে নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন করা উচিত বলে মত দেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া কর্মসংস্থানে বিশেষ নজর থাকা উচিত।

কোভিড মোকাবিলায় সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, তা মূলত ব্যাংকনির্ভর। অথচ অন্যান্য দেশে সরাসরি নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর যেমন চাপ পড়েছে, তেমনি ব্যাংকের সঙ্গে যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের তেমন যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই, তারা প্রণোদনার আওতার বাইরে থেকে গেছে।

ছোটো উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন প্রণোদনার প্রস্তাব সিপিডির

ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজে বাস্তবায়নে তারল্য সুবিধা দিলেও শেষমেশ দায়িত্বটা ব্যাংককেই পালন করতে হয়েছে। ব্যাংক আরও চাপে পড়েছে—মাথাব্যথাটা তাদেরই।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এমনিতেই নাজুক। গত কয়েক বছরে খেলাপি ঋণের বোঝা সৃষ্টি হয়েছে। কোভিডের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক যে ঋণ পরিশোধে শিথিলতা দিয়েছে, তাতে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কমেছে, কিন্তু বাস্তবে ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর চাপ বেড়েছে।

কিন্তু চলতি ঋণ পরিশোধে এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে বিলম্ব করার সুযোগ দেওয়া হলে সমস্যা। ব্যাংককেও ব্যবসা করতে হয়। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজে বাস্তবায়নে তারল্য সুবিধা দিলেও শেষমেশ দায়িত্বটা ব্যাংককেই পালন করতে হয়েছে। ব্যাংক আরও চাপে পড়েছে—মাথাব্যথাটা তাদেরই। তিনি আরও বলেন, সে কারণেই ব্যাংকগুলো এখন বলছে, ঋণ পরিশোধ বিলম্বিত করার সুযোগ এখনই বন্ধ করার পাশাপাশি চলতি ঋণ মেয়াদি ঋণে রূপান্তরিত করার সুযোগ দেওয়া উচিত। তাঁর অভিযোগ, দেশে অনেকেই স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপ করেন। এ সুযোগে অনেকেই তেমনটা করতে পারেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সামষ্টিক অর্থনীতির হালচাল নিয়ে উপস্থাপনা পেশ করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। উপস্থাপনায় তিনি জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এডিপির মাত্র ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। যে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে এত কথা হলো, সেই স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়েছে সবচেয়ে কম—১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এমনকি আগের অর্থবছরেও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় এর চেয়ে বেশি ছিল।

অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে আরও অংশগ্রহণ করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি কর্মসংস্থানমুখী ব্যয় বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here