কালাইয়ে বিদেশি তরমুজ চাষে সফলতা

0
551

বরেন্দ্রভূমি হিসেবে খ্যাত ও ধান-আলুর উত্পাদনের জন্য জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পরিচিতি প্রাচীনকাল থেকেই। তবে নতুন করে তাইওয়ানের গোল্ডেন ক্রাউন জাতের হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন উপজেলার বহুতিদর্গাপাড়ার বর্গা চাষি এনামুল হক। তিনি ৩৩ শতক জমি বর্গা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন বিদেশি জাতের এই তরমুজ চাষ। বর্তমান তার খেতে ছোট-বড় কয়েক শ’ তরমুজ মাচায় মাচায় বাতাসে দুলছে। নতুন জাতের এই তরমুজ চাষে সফলতা আসায় এলাকার অনেক কৃষক এটি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সরেজমিন দেখা যায়, কালাই সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের বহুতিদর্গাপাড়ার বর্গা চাষি এনামুল হক ৩৩ শতক বন্যামুক্ত ও উঁচু জমিতে বিদেশি গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আবহাওয়া তরমুজ চাষের উপযোগী। তবে উষ্ণ অঞ্চল হওয়ায় এই উপজেলার কোথাও তরমুজের চাষ হয় না। এরপরও কালাইয়ে এই প্রথম অসময়ে বিদেশি তরমুজ চাষ করে সফল কৃষকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন এনামুল হক। তার চেষ্টা আর শ্রমের ফসল হিসেবে কয়েক শ তরমুজ এখন মাচায় মাচায় শোভা পাচ্ছে। বিষ ও ফরমালিনমুক্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হলুদ রংয়ের তরমুজগুলো দেখতে আকর্ষণীয়, খেতে সু-স্বাদু ও চাহিদা বেশি থাকায় নতুন জাতের এই তরমুজ দেখতে খেতে ভিড় করছেন অনেকেই। চাষি এনামুল হক বলেন, ৩৩ শতক জমি বর্গা নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী সেখানে ২২টি বেড করে মাটির সঠিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে রাখি। এরপর গত ২২ জুন ১৮ ইঞ্চি পর পর তরমুজের বীজ রোপণ করি। বীজ রোপণের ৩৫ দিনের মধ্যে গাছ মাচায় উঠে যায়। ৪০ দিনের মধ্যে গাছে প্রচুর ফুল ও কুড়ি আসে। তারপর ৭৫ দিনে পরিপক্ক হয়ে মাচায় ডোগায় ডোগায় ঝুলে আছে আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের প্রায় ২ হাজার ৪০০ তরমুজ। এই তরমুজ ভেতরে লাল টুকটুকে, রসালো আর খেতে খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। তিনি আরো বলেন, বাজারে অসময়ের এই তরমুজের চাহিদাও অনেক বেশি, দামও ভালো। তার এই পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২২ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে আয় হবে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জাহান জেবা বলেন, এই উপজেলার কৃষকেরা ধান ও আলুর চাষ করতে বেশি আগ্রহী। তবে নতুন ধরনের এই তরমুজ এলাকার কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তবে এনামুল হকের এই সফলতার পেছনে উপজেলা কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here