করোনাকালেও থেমে নেই মৌলভীবাজারের চাশিল্প

0
257

মৌলভীবাজারের উৎপাদিত চা দিয়েই দেশের সিংহভাগ চায়ের চাহিদা মেটে। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অনেক শিল্প হুমকীর মুখে পড়লেও বন্ধ হয়নি চাশিল্প। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি বাগান কর্তৃপক্ষ বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। ফলে এই শিল্প ব্যাপক ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা পেয়েছে। এছাড়া চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষকেও করোনাকালে কাজ হারিয়ে পথে বসতে হয়নি। গত তিন মাসে মৌলভীবাজারের ৯২টি সহ দেশের ১৬৬ টি চা বাগানে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। মার্চে খরার কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতে চা গাছে সবুজ কুঁড়ির দেখা মিলেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে বলে মনে করছেন চাবিজ্ঞানীরা। ভাড়াউড়া চা বাগানের নারী শ্রমিক সুস্মিতা তাতি বলেন, ‘এখন যদি আমরা পাতা না তুলি তাহলে নষ্ট হয়ে যাবে। এতে আমাদেরই ক্ষতি হবে। তাই করোনা পরিস্থিতিতেও সতর্ক হয়ে পাতা তোলার কাজ করছি।’ শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা বাগানের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সেলিম রেজা চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, মৌলভীবাজারের  চা বাগানগুলোর গেট বন্ধ থাকছে সবসময়। আর গেটের পাশে রয়েছে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। পাতা তোলার সময় শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুপুরে খাওয়ার সময় সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’ বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান জিএম গোলাম মোহাম্মদ শিবলী সারাবাংলাকে জানান,  শ্রমিকরা কাজ করার সময় একসঙ্গে হওয়ার সুযোগ নেই। তারা বরং শ্রমিক লাইনে কাছাকাছি থাকেন। তাই লাইনে না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে চা বাগান বন্ধ করে দেয়ায় গাছের পাতা বড় হয়ে চা অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই পাতা ছেঁটে ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ভারত। আর আমাদের দেশের শ্রমিকরা কাজ অব্যাহত রাখায় বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এ দেশের চাশিল্প। গত বছর দেশে চা উৎপাদিত হয় সাড়ে ১৬ কোটি কেজি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হবে বলে জানান তিনি। মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সারাবাংলাকে বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে শ্রমিকদের। লকডাউনের শুরু থেকেই চা শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি মদের দোকান (পাট্টা) ও বাগানে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কর্মরত চা শ্রমিকদের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ একেবারেই কম বলে জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here