দেশে বৈধভাবে এল ১১ কেজি সোনা

0
311

দেশে বৈধভাবে আনা হলো ১১ কেজি সোনা। গতকাল মঙ্গলবার এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ বিমানে সোনার চালানটি দেশে আসে। এটি আমদানি করেছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সোনা আমদানির ঘটনা। দেশে ২০১৮ সালে স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এই নীতিমালার অধীনে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ডিলারশিপ পায়। প্রতিষ্ঠানটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ১০ জুন তারা গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ হাজার গ্রাম (১১ কেজি) পাকা সোনা আমদানির জন্য আবেদন করে।  আবেদনটি যাচাইবাছাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনাপত্তি দিলে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড সোনার প্রথম চালানটি আনে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম আনুষ্ঠানিক আমদানির ঘটনা। 
স্বর্ণ নীতিমালা অনুযায়ী, দেশে বছরে ২০-৪০ টন সোনা লাগে, যার বড় অংশ আসে বিদেশফেরত বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছ থেকে কিছুটা পুরোনো সোনা গলিয়ে সংগ্রহ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা তাঁদের মজুত সোনার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারতেন না। আবার জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীরা সোনা আমদানি করতেন না।  দেশে সোনার ব্যবসায় স্বচ্ছতা আনতে দীর্ঘদিন ধরে একটি নীতিমালা করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। পরে নীতিমালা চূড়ান্ত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর দেশে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা সোনা আনুষ্ঠানিক হিসাবে আনতে ২০১৯ সালের জুন মাসে স্বর্ণ মেলার আয়োজন করা হয়।  এ নিয়ে জারি করা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতি ভরি সোনায় আয়কর হবে ১ হাজার টাকা, হীরার ক্ষেত্রে যা ৬ হাজার ও রুপায় ৫০ টাকা। ২০১৯ সালের জুন শেষে এনবিআর সোনা বৈধ করার মাধ্যমে প্রায় ১৮৩ কোটি টাকা কর পায়। সাদা হয় প্রায় ১৮ লাখ ভরি সোনা। হীরা ও রুপায় কর পাওয়া যায় প্রায় ৩ কোটি টাকা। সোনা বৈধ করার সুযোগ নেন প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী।  স্বর্ণ নীতিমালায় দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে সোনা আমদানির জন্য গোল্ড ডিলার নিয়োগের বিধান রাখা হয়। খাত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক আবেদন করলেও সব শর্ত পূরণ না হওয়ায় মাত্র ১টি ব্যাংক ও ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে নবায়নযোগ্য দুই বছর মেয়াদি লাইসেন্স প্রদান করা হয়। কিন্তু শুল্ক জটিলতার কারণে লাইসেন্স পাওয়ার ৬ মাসেও কোনো প্রতিষ্ঠান সোনা আমদানিতে আগ্রহ দেখায়নি।  চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোনা আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) তুলে নেওয়া হয়। এরপরই প্রথম চালান এল।  এ বিষয়ে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ শিল্প ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘দেশের জুয়েলারি ইতিহাসে একটি সোনালি অধ্যায় যুক্ত হলো। আমি বিশ্বাস করি, এই শিল্পে আমাদের যে ঐতিহ্য ও সক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যে নেতৃত্ব দিতে পারব, যদি আমার মতো সবাই এগিয়ে আসে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here