করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের সাধারণ ছুটি এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক শুল্কায়ন বন্ধ থাকার কারণে নির্ধারিত সময়ে আমদানিকারকরা বন্দর থেকে মালামাল খালাস করতে পারেননি। একই সঙ্গে শিপিং এজেন্সির থেকে প্রয়োজনীয় দলিল পত্রাদিও সংগ্রহ করতে পারেননি। এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্সির জরিমানা মওকুফের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জরিমানা মওকুফের জন্য নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এই আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন আমদানিকারকরা। চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফেন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ বেলাল সাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনস্বার্থে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন ও পর্যায়ক্রমে ৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এ সময় বিভিন্ন আমদানিকারকের আমদানিকৃত পণ্য মুদ্রণশিল্পের কাঁচামাল পেপার এবং পেপার বোর্ড চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কোনো নির্দেশনা না থাকায় বন্দরে আটকা পণ্যগুলোর শুল্কায়ন করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে কাস্টম কর্তৃপক্ষও শুল্কায়ন বন্ধ রাখেন। এর মধ্যে গত ২২ এপ্রিল এনবিআর থেকে সার্কুলার জারির মাধ্যমে স্বাভাবিক শুল্কায়নের আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু গত ২৫ মার্চ থেকে সরকারি ছুটি এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় অনেক আমদানিকারক বন্দর থেকে মাল খালাস করতে পারেননি। একই সঙ্গে শিপিং এজেন্সির থেকে প্রয়োজনীয় দলিল পত্রাদিও সংগ্রহ করতে পারেননি। চিঠিতে বলা হয়, এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষের জরিমানা দাবি করা যুক্তিযুক্ত মনে হয় না। বরং এতে ব্যবসায়ীদের ওপর প্রবল চাপের সৃষ্টি হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিপিং এজেন্ট ও বন্দরের জরিমানা মওকুফের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে। চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো জরিমানা ছাড়াই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পণ্য খালাস করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। শিপিং এজেন্টদের অফিস দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকায় কাগজ তৈরিতে দেরি হচ্ছে এবং তাতে জরিমানা গুণতে হচ্ছে ব্যব্যসায়ীদের। শিপিং অফিস দুপুর ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা রোজার মাসে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু এবার সে সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে কীভাবে তাদের ব্যবসা পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া যায় সে ব্যাপারে একটি কৌশল নির্ধারণ করার আহ্বান জানান তিনি।