অর্থের যথাযথ ব্যবহারের আহ্বান সিপিডির

0
302

নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিতভাবে কাজের অংশ হিসেবে তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এ অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। শুধু সার্ক নয়, আন্তর্জাতিকভাবে যে ফান্ড বরাদ্দের কথা বলা হচ্ছে, এটাও সঠিকভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানায় সিপিডি। 

করোনার প্রভাবের কারণে অতীতের মতো গণমাধ্যম কর্মীদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন না করে গতকাল সিপিডি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে। এতে ‘করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকির পর্যালোচনা এবং সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। সিপিডির ফেসবুক পেজে এবং সিপিডি ওয়েবসাইট (.িপঢ়ফ.ড়ত্ম.নফ) থেকে সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিক ইসলাম খান, বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

করোনাভাইরাসের কারণে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছে সিপিডি। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়েও নেতিবাচক ধারা হতে পারে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, যেসব দেশ থেকে আমদানি-রফতানি করা হয়, সব দেশই করোনায় আক্রান্ত। ফলে সামগ্রিকভাবে বহির্খাতে যে পারফরম্যান্স, সেটা সামনের দিকে নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছি।

বিশ্বব্যাপী মহামারী রূপ নিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে দেশে একজন-দুজনের হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ জন, যা দেশের জন্য উদ্বেগজনকভাবে স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরেন ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে এখনই নেতিবাচক প্রভাব দেখছি। এটা সামনে আরো নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিটওয়্যারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ ঋণাত্মক। ওভেনওয়্যারের ক্ষেত্রে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ ঋণাত্মক। হোম টেক্সটাইলে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণাত্মক। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারছি, আগামী কয়েক মাসে এটা আরো ঋণাত্মক হতে পারে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, রেমিট্যান্স ২০১৯ সালে ভালো ছিল। কিন্তু আগামীতে রেমিট্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা রয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব খুব স্বল্পমাত্রায় হলেও অন্তত ৮০ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। আর খুব বেশি মাত্রায় প্রভাব পড়লে বেকার হবে ২ কোটি ৪৭ লাখ। যেখানে এর আগে ২০০৮-০৯ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরবরাহের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরবরাহের যে শৃঙ্খলা বা সাপ্লাই চেইনে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সেটা আমরা দেখি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দামের ক্ষেত্রে মোটামুটিভাবে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রভাব দেখছি। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে। ডাল, মাছ, মুরগি, তেল, রসুন ইত্যাদির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা টিসিবি ডাটা থেকে আমরা দেখছি। উৎপাদন ক্ষেত্রেও সরবরাহজনিত সমস্যা এবং আমদানিতেও সরবরাহজনিত সমস্যা দেখতে পারছি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিশ্ব অর্থনীতিকে বারবার নিম্নমুখী রিভার্স করছে উল্লেখ করে ড. ফাহমিদা বলেন, তারা (আইএমএফ) বলছে ২০১৯ সালে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, তার চেয়ে শূন্য দশমিক ১ পয়েন্ট কম হবে ২০২০ সালে। ২০২১ সালে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কম হবে। আর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটা জিডিপিতে যে প্রভাব পড়বে সেটা আইএমএফ বলছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এটা বাণিজ্য ক্ষতি, বিনিয়োগ হারানোর মধ্যে এ ক্ষতি আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। তাদের প্রতি সরকারের বিশেষ নজর দিতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here