ঢাকায় তিন দিনব্যাপী ইউএস ট্রেড শো অনুষ্ঠিত হবে ২৭-২৯ ফেব্রুয়ারি। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ও ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যৌথভাবে এ শো আয়োজন করছে। ট্রেড শোর উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূন। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন (ডিসিএম) জো আনে ওয়াগনার বলেন, ২৭তম বার্ষিক ইউএস ট্রেড শোতে বাংলাদেশী ভোক্তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেসব উচ্চমানের, সর্বাধুনিক আমেরিকান পণ্য ও সেবা সরবরাহ করতে পারে, সেগুলো তুলে ধরা হবে। এ ট্রেড শো আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা (জিএসপি) স্থগিতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তার অভাবের কারণ দেখিয়ে এ সুবিধা স্থগিত করা হয়। কাজের পরিবেশ উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের এ সুবিধা স্থগিত থাকবে। বিশেষ করে রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই জিএসপি সুবিধা বাতিল করা হয়। এটা দুই সরকারের বিষয়। এটা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ব্যবসায়ী সম্পর্ক বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে ট্রেড শো আয়োজন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ২৭ বছর আগে বাংলাদেশ ট্রেড শোর আয়োজন করা হয়। তখন আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা ছিল ৫৭ মিলিয়ন ডলারের মতো। ২৭ বছর পরে এখন তা ৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশে মোট ব্যবসার ৯ শতাংশেরও বেশি এখন আমেরিকার সঙ্গে। ট্রেড শোর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিটা ফিরেছে। আমাদের এক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ অবশ্যই কাজে এসেছে। আমাদের এ ট্রেড শোতে এখন বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি আসছে। দিনে দিনে কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়ছে। এ বছরে নতুন ১১টি কোম্পানি অংশ নিচ্ছে।
নভেল করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস ইস্যু এখনো চলমান, এটা নিয়ে ট্রেড শোর পরে আলোচনা করা যাবে। এ বিষয়ে সরকার যদি আমাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চায়, অবশ্যই করা হবে। ট্রেড শোর মাধ্যমে মূলত আমেরিকার কোম্পানিগুলোর পণ্যের বাজারে পরিচিতি এবং দুই দেশের মধ্যে একটি সেতুবন্ধ তৈরি করতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অ্যামচেমের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন, সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ট্রেড শোতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে। কোম্পানিগুলো ৭৮টি স্টলে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। জ্বালানি, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং খাদ্য ও পানীয় খাতসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এখানে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।
ট্রেড শো চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস চারটি তথ্যবহুল সেমিনারের আয়োজন করবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, ওয়ার্ক ভিসাসহ বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে দূতাবাস কর্মকর্তারা আলোচনা করবেন।
এরপর বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়ন ও এডুকেশন ইউএসএ অ্যাডভাইসিং সেন্টারগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দেয়া অধ্যয়নবিষয়ক পরামর্শ সেবাবিষয়ক একটি অধিবেশন।
এছাড়া ২৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা (ইউএসএআইডি) ‘বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের সুযোগসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করবে।