চুক্তি স্বাক্ষর করে বাণিজ্যযুদ্ধ শিথিল করল যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

0
270

দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে চলা বাণিজ্যযুদ্ধ শিথিলে অবশেষে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করল বিশ্ব অর্থনীতির দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। গতকাল বুধবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হের মধ্যে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়। এতে ঝুঁকিতে থাকা বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চুক্তি সাক্ষরের সময় দুই দেশের ব্যবসায়ী, কূটনীতিক ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পরে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এই চুক্তি মার্কিন অর্থনীতির জন্য পরিবর্তন আনবে। এই চুক্তি দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরালো করবে। চীনা নেতারা এটিকে একটি ‘উইন-উইন’ চুক্তি হিসাবে অভিহিত করেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে আরও উন্নত সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

মার্কিন পক্ষ এই চুক্তিকে একটি বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা এটিকে দেখছে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্কের নবপর্যায় হিসেবে। ওয়াশিংটন একই সঙ্গে বলেছে যে এই চুক্তিতে এমন কিছু বিষয় রাখা হয়েছে, যাতে চীন তার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হলে বেইজিংয়ের ওপর নতুন করে শুল্কারোপের পথ খোলা থাকে।

চুক্তির মূল শর্ত হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আগামী দুই বছরে বর্তমানের চেয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলার বেশি মূল্যমানের পণ্য ও সেবা কিনবে এবং মেধাস্বত্ব আইন আরও শক্তিশালী করবে। ২০০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে কৃষি খাতে ৩২ বিলিয়ন ডলার, উৎপাদন খাতে ৭৮ বিলিয়ন ডলার, জ্বালানি খাতে ৫২ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাতে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ক্রয় করবে চীন । বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত নতুন শুল্কের কিছুটা অর্ধেক করে দিতে সম্মত হয়েছে।

চীন থেকে আমদানি করা আনুমানিক ৩৬০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবার ওপর ২৫ শতাংশের বেশি শুল্ক বজায় রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর যে নতুন শুল্ক আরোপ করেছিল, এর বেশির ভাগ অংশই বজায় রাখবে।

চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হে বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় পার্থক্য থাকলেও দুই দেশ পরস্পরের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, যাতে উভয়েই উপকৃত হয়। এই চুক্তি মূলত দুই দেশের মধ্যে সাম্য ও পারস্পরিক সম্মানের জায়গা তৈরি করেছে।

২০১৮ সালে চীনের সঙ্গে পণ্য বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার কোটি ডলার। আর সেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৪ হাজার কোটি ডলারের কিছু বেশি। নতুন চুক্তির মধ্য দিয়ে এ ব্যবধান কমিয়ে আনতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।

Source – Prothom Alo

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here