পাহাড়সম খেলাপি ঋণ, নানা অনিয়ম ও তারল্য সংকটের কারণে নাজুক অবস্থায় আছে দেশের ব্যাংকিং খাত। নিরীক্ষা দাবির বকেয়া অর্থ নিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে চলছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) টানাপড়েন। এদিকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মেয়াদ শেষ হচ্ছে তালিকাভুক্ত ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের। সব মিলিয়ে ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে শেয়ারবাজারের মোট বাজার মূলধনের ৪৬ শতাংশ দখলে রাখা এই তিন খাতের কোম্পানিগুলো। ফলে এসব খাতে বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা। আর বিনিয়োগকারীদের এই উদ্বেগই শেয়ারবাজার পতনে প্রধান ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজারের মন্দা সময়ে ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও সম্পদ ব্যবস্থাপকদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড খাত। ফলে ব্যাংক, টেলিকম, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পাশাপাশি এ খাতের শেয়ারদরেও ধারাবাহিক পতন অব্যাহত আছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মন্দ প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও), সুশাসনের অভাব এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতি আস্থাহীনতা। আর এসব কারণেই গত এক বছরে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০ খাতের ৩২০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। প্রায় সব খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ক্রমাগত দরপতনে প্রাইস আর্নিং রেশিও (পিই রেশিও) বা মূল্য-আয় অনুপাত সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাপক হারে কমেছে ব্যাংক, টেলিকম, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পিই রেশিও। তার পরও এসব খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দিকে বিনিয়োগকারীদের কোনো আগ্রহ নেই। উল্টো আতঙ্কিত হয়ে তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
পিই রেশিও হচ্ছে শেয়ারের ভ্যালুয়েশন পরিমাপের একটি নির্দেশক। কোনো কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দরকে শেয়ারপ্রতি আয় দিয়ে ভাগ করলে পিই রেশিও পাওয়া যায়। যে শেয়ারের পিই রেশিও যত কম সে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ তত বেশি আকর্ষণীয় ও নিরাপদ।
গতকালের শেয়ারদর বিবেচনায় ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ছিল ৬ দশমিক ৯৮, টেলিযোগাযোগ খাতের পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ২২ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ছিল ১০ দশমিক ৪৪। যদিও গতকাল
ডিএসইর সার্বিক পিই রেশিও ছিল ১০ দশমিক ৭১। সে হিসাবে এ তিন খাতের পিই রেশিও ডিএসইর সার্বিক পিই রেশিওর চেয়ে কম ছিল।
অথচ গত বছরের জানুয়ারি শেষে ডিএসইর সার্বিক পিই রেশিও ছিল ১৬ দশমিক ৩৮। এ সময় ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ছিল ১০ দশমিক শূন্য ২, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ছিল ১৬ দশমিক ৫৯ ও টেলিযোগাযোগ খাতের ছিল ২০ দশমিক ৪১।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, দেশের ব্যাংক খাতের বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে বকেয়া রাজস্ব আদায় নিয়ে বিটিআরসির দ্বন্দ্ব চলছে। এ বিষয়গুলো সার্বিকভাবে এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আর এর প্রভাবে শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাজারকে ভালো করতে হলে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে বর্তমানে যেসব খাতে পিই রেশিও তুলনামূলক কম রয়েছে, সেসব খাতের ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিতে যেন তারা বিনিয়োগ করেন। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের বেশকিছু ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
শেয়ারবাজারে খাতভিত্তিক বাজার মূলধনে সবচেয়ে বেশি অবদান ব্যাংকিং খাতের, ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। যদিও এ খাতটিই সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে বর্তমানে। দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে লাগামহীনভাবে। ২০১০ সাল শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা, যা ছিল ওই সময়ে বিতরণকৃত ঋণের ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশই নাম লিখিয়েছে খেলাপির খাতায়। পুনর্গঠন, পুনঃতফসিল ও অবলোপনকৃত ঋণ হিসাবে ধরলে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের এক-চতুর্থাংশই বর্তমানে দুর্দশাগ্রস্ত।
বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের মোট মূলধনেরও বেশি অর্থ খেলাপি হয়ে গেছে। ২০১০ সালে এ খাতের মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০১৮ সালে তা ১০১ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শুধু খেলাপি ঋণই নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে অবনমন হয়েছে ব্যাংকের অন্যান্য মৌলিক সূচকেও। যেকোনো দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণে গ্রহণযোগ্য সূচক হলো সম্পদের বিপরীতে আয়, নিট সুদ আয় ও সুদবহির্ভূত আয়। পাশাপাশি ইকুইটির বিপরীতে আয়, মূলধনের বিপরীতে খেলাপি ঋণ, খেলাপি ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের হারও বিবেচনায় নেয়া হয় এক্ষেত্রে। গত এক দশকে দেশের ব্যাংকিং খাতের এসব সূচকেরই ধারাবাহিক অবনমন হয়েছে।
বাজার মূলধনে টেলিযোগাযোগ খাতের অবদান ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। এ খাতের সবচেয়ে বড় মূলধনি কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধনের ১২ দশমিক ২৬ শতাংশ ছিল কোম্পানিটির দখলে। গত বছর টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে। এ অর্থ আদায় নিয়ে চিঠি চালাচালি, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক এমনকি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় গ্রামীণফোন। গত নভেম্বরে নিরীক্ষা দাবির পাওনা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। অবশ্য এ সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ আবেদন জমা দিয়েছে টেলিকম অপারেটরটি। তাছাড়া সম্প্রতি গ্রামীণফোনের নিরীক্ষা আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বিষয়টি নিষ্পত্তিতে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতি বরাবর লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছে টেলিনর। সরকারের সঙ্গে পাওয়া নিয়ে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হলে টেলিনর বাংলাদেশে ব্যবসা অব্যাহত রাখবে কিনা, তা নিয়েও চলছে আলোচনা। আর এসব অনিশ্চয়তার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদরে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। গত এক বছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারদর ৩৮৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে গতকাল সর্বশেষ ২৩৪ টাকা ২০ পয়সায় এসে দাঁড়িয়েছে। গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমেছে। এর ফলে গতকাল টেলিযোগাযোগ খাতে ২ দশমিক ৯ শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে। এমনকি গ্রামীণফোনের কারণে গত এক বছরেও টেলিযোগাযোগ খাতে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে।
দেশে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একসময় ছোট আকারের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। কিন্তু স্থাপিত উৎপাদন সক্ষমতা এরই মধ্যে চাহিদাকে ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদনের অপেক্ষায় আছে বড় ও মাঝারি একাধিক কোম্পানি। নির্মাণাধীনও আছে বেশ কয়েকটি। এ অবস্থায় ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা যদি বাড়ানো হয়ও সেক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ অর্থ পাবে না এসব কেন্দ্র।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগামী পাঁচ বছর বা ২০২৪ সালের মধ্যে মেয়াদ শেষ হচ্ছে সাত কোম্পানির ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের। এর মধ্যে আছে সামিট পাওয়ারের আটটি, ডরিন পাওয়ারের তিন এবং ওরিয়ন ও খুলনা পাওয়ারের দুটি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র। একই সময়ের মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে বারাকা পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার ও শাহজিবাজার পাওয়ারের একটি করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের। বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিগুলোর আকর্ষণীয় রাজস্ব আয় ও মুনাফার কারণে একসময় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল খাতটি। কিন্তু ছোট আকারের কেন্দ্রের মেয়াদ না বাড়ানোর বিষয়টি সামনে আসার কারণে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে। গতকাল ডিএসইতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ১ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে। আর গত বছর এ খাতে বিনিয়োগের বিপরীতে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, দেশের ব্যাংক খাত ও টেলিযোগাযোগসহ যেসব খাতের সমস্যার কারণে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সেগুলোর সমাধান করতে হবে। এ মাসের ২০ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের শেয়ারবাজার সংক্রান্ত তদারকি কমিটিতে আমরা সব সমস্যা তুলে ধরব। শেয়ারবাজারের অবস্থা উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। তাই সবকিছুরই সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।
সারা বিশ্বেই বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ বিনিয়োগের আশ্রয়স্থল হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ড। যখন শেয়ারবাজার নিম্নমুখী থাকে তখন মিউচুয়াল ফান্ডগুলো বাজার থেকে কম দামে শেয়ার কিনে থাকে। এর ফলে পড়তি বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সাপোর্ট হিসেবেও কাজ করে। কিন্তু আমাদের দেশে বেশকিছু মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপকরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থবিরোধী অতালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের মাধ্যমে ফান্ডের অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন। এতে ফান্ডগুলোর বিনিয়োগকারীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন পাননি।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সবগুলো মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে গত তিন বছরে ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের শেষের দিকে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ আরো এক মেয়াদে ১০ বছর বাড়ানোর সুযোগ করে দেয় বিএসইসি। এর ফলে কার্যত মিউচুয়াল ফান্ডগুলোতে ইউনিটহোল্ডারদের বিনিয়োগ আরো ১০ বছরের জন্য আটকে যায়। কারণ প্রায় সবগুলো মিউচুয়াল ফান্ডই তাদের এনএভির তুলনায় ডিসকাউন্টে লেনদেন হচ্ছে। এর ফলে বাজারদরে ইউনিট বিক্রি করলে ইউনিটহোল্ডারদের লোকসান গুনতে হবে। আর ফান্ডের মেয়াদ শেষে অবসায়ন হলে তারা এর চেয়ে বেশি অর্থ ফেরত পাওয়ার সুযোগ থাকত। মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডে মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরো তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিটও দায়ের করেছেন মিউচুয়াল ফান্ডে এক বিদেশী বিনিয়োগকারী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর অ্যাকাউন্টিং ফর ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মিজানুর রহমান অবশ্য শেয়ারবাজারের পতনের পেছনে বড় মূলধনি খাতের শেয়ারের দরপতনের পাশাপাশি আরো বেশকিছু বিষয়কে দায়ী করেছেন। তার মতে, দেশের আর্থিক খাতের ব্যাপক আকারের তারল্য সংকটের পাশাপাশি সম্পদের মানে অবনমন হয়েছে, যা শেয়ারবাজারকেও প্রভাবিত করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি ও ডিএসইতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে বাজে আইপিওর অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং এসব কোম্পানির কিছু বন্ধ হয়ে গেছে, কিছু কোম্পানির আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইর এমডি নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুঁজিবাজার নিয়ে চরম আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। আর এ কারণে শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
Source – Bonik Barta