NewIncredible offer for our exclusive subscribers!Read More
Asia India

মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়ছে ভারত

  • January 14, 2020
  • 1 min read
মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়ছে ভারত

দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির উন্নয়নশীল একটি দেশ স্বাভাবিকভাবেই উন্নত দেশের কাতারে ঢুকে যাবে—সাধারণভাবে ব্যাপারটা সে রকমই মনে হয়। কিন্তু সেই দেশটি যে অনিবার্যভাবে উন্নত দেশের কাতারে ঢুকে যাবে, সেই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। 

মেক্সিকো, ব্রাজিল ও তুরস্কের মতো প্রতিশ্রুতিশীল অর্থনীতিগুলো জাপান ও ইউরোপের উন্নত দেশের মতো হতে পারেনি। তারা মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকা পড়েছে। ২০০৬ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত গিল ও হোমি খারাস এই শব্দবন্ধ প্রথম ব্যবহার করেন। এর অর্থ হলো টানা কয়েক বছর একটি দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পর ধারাবাহিক শ্লথগতি। কথা হচ্ছে, ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার পথে ধাবমান ভারতও কি সেই ফাঁদে আটকা পড়তে যাচ্ছে? 

৭ জানুয়ারি ভারতের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসবে, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর যা সর্বনিম্ন। 

ভারতের গল্পটাও অন্যান্য দেশের মতো। টানা কয়েক বছরের দ্রুত প্রবৃদ্ধির পর দেশটির অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। সে জন্য অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা, ভারতের অবস্থাও মেক্সিকো ও ব্রাজিলের মতো হতে যাচ্ছে কি না। 

গত বছরের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পর্ষদের তৎকালীন সদস্য রথিন রায় সতর্ক করে বলেছিলেন, ভারতের প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের (১০০০-৩৮০০ ডলার) পর্যায়ে নেমে আসছে। এই পরিস্থিতিতে গতিপথ বদলানো না হলে ভারত মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকা পড়তে পারে। 

রথিন রায় বলেছিলেন, ‘আমরা ব্রাজিল হব, দক্ষিণ আফ্রিকা হব। কিন্তু আমরা কখনোই চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবৃদ্ধির পথে যেতে পারব না। যে দেশ মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়েছে, তারা কখনো সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।’ তাঁর সেই সতর্কবাণীর পর পরিস্থিতি কেবল আরও খারাপই হয়েছে। 

গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ভারতের উৎপাদন খাত টানা তিন মাস সংকুচিত হয়েছে। আর সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামীণ অঞ্চলের মজুরি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। অনেক অর্থনীতিবিদই বলছেন, ভারতীয় অর্থনীতি একধরনের কাঠামোগত শ্লথগতির খপ্পরে পড়েছে। 

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইন্দরমিত গিল বলেছেন, এই গতিতে চললে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ (মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯৬ ডলার থেকে ১২ হাজার ৫৫ ডলার) হতে পারবে না। 

ইন্দরমিত গিল আরও মনে করেন, এই ফাঁদে পড়তে না চাইলে ভূমি ও শ্রম আইনে সংস্কার দরকার। কিন্তু মোদি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মতো রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নিয়ে ব্যস্ত। তিনি আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ৭-৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা আমাদের ভুলে যেতে হবে। বরং বাস্তবে তা এর অর্ধেকে, অর্থাৎ সেই হিন্দু রেট অব গ্রোথের যুগে ফেরত যেতে হবে।’ 

অর্থনীতিবিদেরা বলেন, ১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক সংস্কারের পর ভারতের অর্থনীতি ৩০ বছরে ৯ গুণ বেড়েছে। কিন্তু এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো সে কৃষি থেকে উৎপাদন খাতে উত্তরণ ঘটাতে পারেনি। সে জন্য দেশটির জিডিপিতে উৎপাদন খাতের অবদান ১৭ শতাংশের কম। এটাই তার সবচেয়ে বড় সমস্যা।

Source – Prothom Alo

About Author

Business Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.