৬ মাসেই রেমিট্যান্স প্রণোদনার অর্ধেক শেষ

0
231

চলতি অর্থবছর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয় সরকার। আর এতেই হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। এই রেকর্ডের কারণে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির টাকা একসঙ্গে ছাড় করতে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় তৃতীয় কিস্তির ৭৫০ কোটি টাকা ছাড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত রেমিট্যান্সে প্রণোদনার ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করবে না ব্যাংকগুলো। এর বেশি আয় এলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা সাপেক্ষে প্রণোদনা পাবেন গ্রাহকরা। এ ছাড়া গত অক্টোবর মাসে তিন দফায় প্রায় ২৫ পয়সার মতো টাকার অবমূল্যায়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর নভেম্বরে দুই দফায় করা হয়েছে আরো ১৫ পয়সার মতো। সব মিলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর এই দুই মাসে পাঁচ দফায় ৩৫ পয়সার মতো কমানো হয়েছে। ফলে বর্তমানে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা মিলছে। এতে রেমিট্যান্স আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৭১৪ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ২৮৮ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় রেমিট্যান্স ২৩ শতাংশ বেশি পাঠানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রেমিট্যান্স প্রণোদনা বাবদ তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে রেমিট্যান্সে প্রণোদনার ২ শতাংশ বাবদ দুই দফায় এক হাজার ৫৩০ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মোট এক হাজার ৪৮৭ কোটি ৫১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা বিতরণ করেছে।

বর্তমানে এ খাতে ১০২ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ৩৫২ টাকা বাকি আছে। অর্থাৎ অর্থবছরের ছয় মাসেই বরাদ্দের অর্ধেক টাকা শেষ হয়ে গেছে।

গত সপ্তাহে বিষয়টি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ বিভাগকে বলেছে, যে হারে রেমিট্যান্স আসছে এটি অব্যাহত থাকলে খুব শিগগির অবশিষ্ট অর্থ শেষ হয়ে যাবে। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত প্রণোদনা অব্যাহত রাখতে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অবশিষ্ট এক হাজার ৫৩০ কোটি টাকার পুরো অর্থ প্রয়োজন হবে। জরুরি ভিত্তিতে তা ছাড় করার জন্য অনুরোধ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঠানো তথ্যে দেখা গেছে, রেমিট্যান্স প্রণোদনার অর্থ ছাড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি ২৭১ কোটি দুই লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৯ টাক প্রবাসীদের প্রণোদনা দিয়েছে। এর পরই রয়েছে সরকারি অগ্রণী ব্যাংক। ব্যাংকটি ১৪১ কোটি ৮৫ লাখ ৯২ হাজার ৩৯০ টাকা প্রণোদনা বিতরণ করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুই কিস্তির টাকা একসঙ্গে ছাড় করার কথা বললেও অর্থ মন্ত্রণালয় আপাতত এক কিস্তির টাকা ছাড় করবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে তৃতীয় কিস্তির সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা ছাড় করবে অর্থ বিভাগ। শিগগিরই অর্থছাড়ের বিষয়টি নিয়ে অর্থ বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করবে।

সূত্র মতে, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা উত্তোলন সুবিধা শিথিল করেছে। বিদ্যমান নিয়মে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণত দিনে পাঁচবারে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তোলা যায়। আর মাসে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যায়। এর বেশি টাকা উত্তোলনের সুযোগ নেই। তবে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে এটি শিথিল করে একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্সের অর্থ নগদ প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক কর্তৃক সরাসরি সুবিধাভোগীর এমএফএস হিসাবে প্রদান করা যাবে।

Source – Kaler Kantha

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here