অর্থনীতির সাত চ্যালেঞ্জ

0
350

বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ একটি অগ্রসরমাণ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল, উদীয়মান বাঘ। দেশে নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হচ্ছে মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু। এর সঙ্গে রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজও চলছে পুরোদমে। এত অগ্রগতির মধ্যেও বিদায়ী বছরে দেশের অর্থনীতিতে তেমন ভালো কোনো খবর ছিল না। আর তাই মোটাদাগে আর্থিক খাতের ৭ চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বছর, ২০২০।

সবারই প্রত্যাশা- ২০২০ বাংলাদেশের জন্য নতুন সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রার ঢেউ নিয়ে আসবে। খুলে যাবে সম্ভাবনার নবদিগন্ত। তবে সার্বিক বিচারে প্রবাসী আয়ের সুবাতাস ছাড়া দেশের অর্থনীতির প্রায় সব খাতেই কিছুটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে নতুন বছর শুরু হয়েছে। অর্থনীতির এমন পরিস্থিতিতে নতুন বছরে সরকারকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জের মধ্যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করাই প্রধান বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা, উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন, পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা রপ্তানি খাতের উন্নয়ন ও সর্বশেষ ব্যাংকিং খাতে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় করা এ সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, আলোচিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈষম্যও কমিয়ে আনতে হবে। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় ব্যর্থ হলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের উন্নয়নে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি। এজন্য সরকারকে সমন্বিতভাবে কর্মপরিকল্পনা করার সুপারিশ করেন তারা।

জানতে চাইলে সিপিডির সম্মানিত ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছরে ২০১৯ এর যে দুর্বলতাগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করলাম, সেগুলোকে কাটিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবায়ন করা জরুরি। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক যে স্থিতিশীলতা ছিল, ২০১৯-এ এসে তার বেশ কয়েকটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ আহরণে অনেক বড় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সরকারকে এজন্য ব্যাংক থেকে অধিক পরিমাণে ঋণ নিতে হচ্ছে। সেটার কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ কাটতির উপরে তারল্য সঙ্কটের সৃষ্টি হচ্ছে। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৩% টার্গেট ছিল। সেটা ১০% হয়েছে। এ অর্থনীতিবিদের মতে, দেশে বৈদেশিক আয়ে ভারসাম্য থাকছে না। কারণ, আমাদের রপ্তানি কমে যাচ্ছে, রেমিট্যান্স আহরণ ভালো হলেও তা দিয়ে পুরোপুরি চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংকিং খাতে আমাদের খেলাপি ঋণ বাড়তে বাড়তে তা বিতরণকৃত ঋণের ১২ শতাংশে ঠেকেছে। সবকিছু নিয়ে ২০১৯ সালের অর্থনীতি বেশ চাপের মধ্যেই ছিল।

এখন ২০২০ সালে অর্থনীতির এ চাপ মোকাবেলা করতে হলে আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে পারি। প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে পারি, সুশাসন যদি আরো শক্তিশালী করা সম্ভব হয়, বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো করা যায় যায়, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা যদি আরো ভালো করা যায়- তাহলে এ চ্যালেঞ্জগুলো আমরা মোকাবেলা করতে পারব, অর্থাৎ তাৎক্ষণিক যে চ্যালেঞ্জগুলো আসছে সেগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। যেমন- রাজস্ব আদায়, রপ্তানি বাাড়ানো, ঋণপ্রবাহ বাড়ানো, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রভৃতি। আরো যে দুর্বলতা রয়েছে, অর্থাৎ মধ্যমেয়াদি চ্যালেঞ্জগুলোও

মোকাবেলা করতে হবে। যেমন- বৈষম্য হ্রাস করা, যুব-শিক্ষিত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, দক্ষতা বাড়ানো, প্রশিক্ষণ দেয়া, উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ানো।
নতুন বছরে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৯-এর শেষ কয়েক মাসের অর্থনীতির গতিধারা ভালো ছিল না। ব্যাংকিং খাত থেকে শুরু করে একমাত্র রেমিট্যান্স ছাড়া অর্থনীতির সবগুলো সূচকই ছিল নিম্নমুখী। ফলে ২০২০ সালে যে খুব সহজেই এটাকে কাটিয়ে ওঠা যাবে, তা কিন্তু নয়। ব্যাংকিং খাত দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। সুদের হার এপ্রিল থেকে ৯-৬ কার্যকর নিয়ে ব্যাংকারদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমানতকারীদের ওপর একধরনের চাপ থাকবে। ব্যাংকের ওপর থেকে গ্রাহকদের যে আস্থা হারিয়েছে- তা যে উদ্ধার করতে পারবে, তারও কোনো সম্ভাবনা নেই। শেয়ারবাজারসহ অর্থনীতির প্রায় সব খাতেই রয়েছে আস্থাহীনতা।

সাবেক এ গভর্নরের মতে, অর্থনীতির এ চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তোরণ খুব সহজ হবে না। কারণ আমূল পরিবর্তন না আনলে অর্থনীতিতে সুবাতাস আনা সম্ভব নয়। তবে গার্মেন্টস খাতের রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হলে অর্থনীতির গতি কিছুটা ফিরতে পারে। এজন্য গার্মেন্টস খাতকে প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে রপ্তানি খাতকে ওঠানো প্রয়োজন। আবার ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্য মানুষের নিত্যদিনের জীবনযাপনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০২০ সালে জিডিপি দুই অঙ্কে নেয়া অসম্ভব হবে।

রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন : উচ্চভিলাষী রাজস্ব আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। রপ্তানি ও আমদানি কমে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির মন্দার কারণেই ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমেছে। সর্বশেষ হিসাব মতে, সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি প্রায় ২০ হাজার ২২০ কোটি টাকা। এই ৪ মাসের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের সামান্য বেশি, অথচ এবার গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। মূলত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আয়ের প্রধান ৩ খাতেই আদায় কমেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছর থেকেই নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে সরকারকে রাজস্ব আদায়ে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসির হিসেবে উদ্যোগ না নিলে বছর শেষে রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেই সনাতন পদ্ধতিতেই দেশে রাজস্ব আহরণের কাজ চলছে। এছাড়া লোকজন যে ট্যাক্স দিচ্ছে তা আসলে কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে তারও কোনো স্বচ্ছতা বা জবাবদিহিতা নেই। যে কারণে মানুষ ট্যাক্স দিতে আগ্রহ পাচ্ছে না।

পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরানো : বিদায়ী বছরের প্রথম মাসটা বাদ দিলে বাকি সময়টা পতনে ডুবেছিল বাজার। ফলে বছরজুড়েই বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর আর্তনাদ করতে হয়েছে। লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে বিও (বেনিফিসিয়ারি ওনার্স) হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রি করে সাইডলাইনে চলে গেছেন অনেকেই। দেখা গেছে, বছরের শুরুতে ৫ হাজার ৩৮৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ডিএসইএক্স দেখতে দেখতে ঊর্ধ্বমুখী বাজারে হঠাৎ করে নেমে আসে পতনের প্রবণতা। ২৬ ডিসেম্বর লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৪১৮ পয়েন্টে নেমে আসে। এ হিসাবে আগের বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে বিদায়ী বছরের ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সূচকটি কমেছে ১ হাজার ৫৩২ পয়েন্ট। বছরের শুরুতে বাজার মূলধন উত্থানে থাকলেও ২৬ ডিসেম্বর শেষে তা ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকায় নেমে আসে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। তারা বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে খুব দ্রুত পরিকল্পনা করতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ।

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো : ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ আদায় সরকারের জন্য চলতি বছরের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বছরজুড়েই ঋণখেলাপিদের নানা ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১২ শতাংশ। অথচ বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে। তখন ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা মহলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে ব্যাপক সরব। খেলাপি ঋণ কমাতে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত অর্থেই খেলাপি ঋণ কমানোর ওপর জোর দিতে হবে। এ জন্য ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা দরকার। সরকার এই খেলাপি ঋণ নতুন বছরে কতখানি আদায় করতে পারবে তার ওপর অর্থনীতি তথা ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে।

ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ধার : চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বেড়েছে সরকারের ঋণ করার পরিধি। কারণ রাজস্বের ডেফিসিড জিডিপি ৫ শতাংশের উপরে চলে যাচ্ছে। এজন্য সরকারকে ব্যাংকি খাত থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়েছে ৪৭ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে ৯ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা; আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়েছে ৩৭ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাত থেকে নেয়া সরকারের পুঞ্জীভ‚ত ঋণের স্থিতি বা পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। এ পরিমাণ ঋণ নেয়ার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে ধাক্কা লেগেছে। তাই সরকারকে এর বিকল্প ভাবতে হবে।

বেসরকারি খাতে নিম্নগামী ঋণ প্রবৃদ্ধি : সদ্য বিদায়ী বছরে ব্যাংক খাত থেকে বেসরকারি খাতে ঋণ নিয়েছে অনেক কম। জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ধারাবাহিকভাবে কমেছে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার। সবশেষ নভেম্বরে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের বছরের অর্থাৎ ২০১৮ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ছিল ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ব্যাংকের তারল্য সংকট, উচ্চঋণের সুদহার ও অবকাঠামোগত সমস্যা এবং নতুন বিনিয়োগের অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্টরা। এভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ ধারাবাহিক কমতে থাকলে ভবিষ্যতে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ পর্যায়ে চলে যাবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য যে কোনো মূল্যে সরকারকে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করার কথা বলেন তিনি। কারণ বিনিয়োগ না বাড়লে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হলে উন্নয়ন হবে না।

আমদানি ও রপ্তানিতে নেতিবাচক ধারা : দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস রপ্তানি খাত। আর এ খাতেই এখন প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। পাশাপাশি আমদানিও কমে যাচ্ছে। এতে করে বৈদেশিক আয়ের ভারসাম্যে ধাক্কা খাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য বলছে, পোশাক খাতের রপ্তানি কমে যাওয়ায় রপ্তানিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সাড়ে ১২ শতাংশ কম। অন্যদিকে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। চলতি বছর আমদানিও ছিল নিম্নমুখী।

মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন : বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করা নতুন সরকারের নতুন বছরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, নির্ধারিত সময় থেকে অনেক পিছিয়ে বেশির ভাগ মেগা প্রকল্প। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এ কাজ এগিয়েছে ৮৪ শতাংশ। মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি বলে জানা গেছে। কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভৌত অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে ৪৮ শতাংশ। একইভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও দুহাজারি-কক্সবাজার ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্পের কাজও চলছে শম্ভুক গতিতে। নতুন বছরে এই প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেবে।

Source – Bhorer Kagoj.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here