চলতি মাস থেকে নতুন ভ্যাট আইন (মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন) বাস্তবায়ন হয়েছে। সব ধরণের পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশের একক হার না রেখে বেশকিছু পণ্য ও সেবায় হ্রাসকৃত হারসহ কয়কটি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তা সত্বেও নতুন করে কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর (অগ্রিম ভ্যাটের আদলে) আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে হ্রাসকৃত হারের ভ্যাটে রেয়াত নেওয়ার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ কারণে বাজারে পণ্যমূল্য বাড়তে পারে। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক কর্মশালায়ও ইস্যুটি তোলেন সংগঠনটির সভাপতি ওসামা তাসীর। তিনি বলেন, অগ্রিম কর অব্যাহতি এবং ১৫ শতাংশের ন্যায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাটের ক্ষেত্রে রেয়াত প্রদান ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার অনুরোধ করছি। তা না হলে নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যে মূল্যস্ফীতি দেখা দিতে পারে। নতুন ভ্যাট আইনের উপর ব্যবসায়ীদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে ওই কর্মশালার আয়োজন করে ডিসিসিআই। সংগঠনের সভাপতি ওসামা তাসীরের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী ওই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি রাজস্ব কর্মকর্তাদের বিচারিক ক্ষমতা, রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধের আপিলের ক্ষেত্রে প্রতি স্তরে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রদান, রিটার্ন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অনলাইন করা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য বাধাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উপর গুরুত্ব দেন। এ সময় রাজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হয়রানির প্রসঙ্গও উঠে আসে। ওসামা তাসীর বলেন, আমরা ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চাই। কিন্তু হয়রানিমুক্ত পরিবেশের নিশ্চয়তা চাই। আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারাও মাঠ পর্যায়ে হয়রানির ইস্যুটি তোলেন। এ ছাড়া নতুন আইনের নানা জটিলতার বিষয়গুলো তুলে এক্ষেত্রে আরো সহজ ব্যবস্থার দাবি জানান। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অগ্রিম করের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, হিসাবপত্র সঠিকভাবে জমা দিয়ে অগ্রিম করের অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, কাগজপত্র বা হিসাবপত্র রাখবেন না, তা হবে না। রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় কোথায় কর পরিশোধ করেছেন, তা ফেরত নেবেন। তিনি বলেন, বড় বাজেটের জন্য বড় রাজস্ব দরকার। তাই যাদের জন্য ভ্যাট প্রযোজ্য, তাদের সবাইকে ভ্যাটের আওতায় আসা উচিত। কর্মকর্তাদের দ্বারা ব্যবসায়ীদের হয়রানির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতায় না গিয়ে, আমাদেরকে জানান, কোন অফিসার হয়রানি করছে। তাকে আমরা শক্ত হাতে ধরবো।’ এ সময় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেকে হজ করতে যায়। হজের মৌসুমে অনেককে ছুটি দিতে হয়। এখন যদি হজের পরে স্বভাব পরিবর্তন না হয়, তাহলে কি লাভ এটা করে? এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এনবিআর সদস্য শাহনাজ পারভীন, ডিসিসিআই সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, ইমরান আহমেদ প্রমুখ।
Source – Ittefaq