জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দের প্রসপেক্টাস সম্প্রতি রাজধানীর এক হোটেলে বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মোচন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ প্রসপেক্টাস উন্মুক্ত করেন। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামালপুরের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন, সাবেক পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মইন উদ্দিন (অব.)। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী। জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল ময়মনসিংহ বিভাগে প্রথম বাস্তবায়নাধীন সরকারি ইকোনমিক জোন। জোনটি মোট ৪৩৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। জোনটি সফল বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে ৩২ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। জোনটি কৃষিভিত্তিক শিল্প ও গার্মেন্টস স্থাপনের জন্য উপযুক্ত বলে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জোনটিতে গ্যাস সংযোগ লাইন ও ৩৩/১১ কেভিএ বিদ্যুৎ সাবস্টেশন নির্মাণের কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ড্রেনেজ সিস্টেম, ভূমি উন্নয়ন, গ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার, প্রশাসনিক ভবন, ডরমিটরি, সীমানা দেয়াল, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমানের পণ্য উৎপাদন বা রফতানি আয়ের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বেজা এরই মধ্যে ২০টি প্রাইভেট অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে এবং এর মধ্যে ১০টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করেছে। এছাড়া মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল (প্রথম পর্যায়) ডেভেলপার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং নাফ ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। উল্লেখ্য, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের ২৩১ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যেখানে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ৪৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এছাড়া মিরসরাই ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব বেজা পেয়েছে। অনুষ্ঠানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে গুণগত বিদ্যুৎ প্রদানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে জামালপুরে সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে। কারণ এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প ব্যবহারের জন্য এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরসহ দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আন্তরিকভাবে কাজ করবে। সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, জোনটি উন্নয়নে বেজা এরই মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজ শেষ করেছে এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বেজা মনে করে, জোনটির উন্নয়নের কাজ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে সমাপ্ত হবে এবং শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের ফলে প্রত্যক্ষভাবে ৩২ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া পরোক্ষভাবে আরো ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা অত্র এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বেজার নির্বাহী সদস্য মোহম্মদ আইয়ুব। অন্যদের মধ্যে বেজার নির্বাহী সদস্য মো. হারুনুর রশিদ ও অশোক কুমার বিশ্বাস, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাসহ বিনিয়োগে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন ।
Source – Kaler Kantha.