NewIncredible offer for our exclusive subscribers!Read More
Asia Bangladesh Banking & finance Economy

ঈদে চড়েছে ডলারের দাম

  • June 1, 2019
  • 1 min read
ঈদে চড়েছে ডলারের দাম

ঈদের আগে খোলাবাজারে চড়েছে ডলারের দাম। গত দুই দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম বেড়েছে ৫০ পয়সা। বর্তমানে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি করছে সাড়ে ৮৫ টাকা। দুই দিন আগেও এই দাম ছিল ৮৫ টাকা। এক মাস আগে এই বাজারে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা। আর তিন মাস আগে ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে গত এক মাসের ব্যবধানে ৭৫ পয়সা ও তিন মাসের ব্যবধানে ১ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ডলারের দাম। তবে খোলাবাজারে বাড়লেও গত তিন সপ্তাহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম সাড়ে ৮৪ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। যদিও গত এক মাসের ব্যবধানে এখানে ডলারের দাম বেড়েছে মাত্র পাঁচ পয়সা। আর গত তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৫০ পয়সা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঈদের লম্বা ছুটি কাটাতে অনেকেই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার চিকিৎসার জন্যও বিদেশে যাচ্ছেন। আর এ শ্রেণির মানুষ এখন নগদ ডলারের চাহিদা মেটাতে খোলাবাজারে বেশি ভিড় করছেন। এতে খোলাবাজারে ডলারের দাম একটু বেশি চড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের আগে ডলারের চাহিদা বাড়ে। এতে বাজার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটা রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। মে মাসে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো সূত্রে জানা যায়, এবার অন্তত ছয় লাখ বাংলাদেশি ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। এত বেশিসংখ্যক লোক বিদেশে যাওয়ার পেছনে দীর্ঘ ঈদের ছুটিই অন্যতম কারণ। এ ছাড়া চিকিৎসার জন্য অনেকে বিদেশে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ডলারের দাম ৮৪ টাকা থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে রয়েছে। তবে রোজা ও ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক পণ্য আমদানি এবং সরকারি পর্যায়ে এলএনজি ও জ্বালানিসহ কয়েকটি পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে কয়েক দিন ধরে ডলার সংকটে আছে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। বাধ্য হয়েই তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনছে। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য প্রবাহে চাপ পড়ছে।

এবারও ঈদের আগে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বুধবারও দুই কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ২ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত মোট বিক্রি করা হয়েছে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সব মিলে চলতি অর্থবছরের ২৯ মে পর্যন্ত (জুলাই থেকে ২৯ মে) প্রায় ২২৯ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। সাড়ে ৮৪ টাকা দরে এসব ডলার বিক্রি করা হয়েছে। গত অর্থবছরে ডলারের জোগান দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ২৩১ কোটি ডলার বিক্রি করেছিল।

জানা যায়, বাজারব্যবস্থার ওপর ডলারের দাম ছেড়ে দেওয়া হয় ২০০৩ সালে। এরপর ডলারের দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারতি হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বাংলাদেশে পেছন থেকে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সংকটকালীন সময়ে সরবরাহ বাড়িয়ে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়। এতে অর্থনীতিতে এক ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডলারের দাম চাহিদা ও জোগানের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। এতে দাম হয়তো কখনো বাড়বে কিংবা কমবে। কিন্তু সামান্য ওঠানামা করতেই পারে। এতে প্রবাসীরা সুবিধা পাবে। রপ্তানিকারকরা লাভবান হবে। অন্যদিকে অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমবে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কর্মকাণ্ড বাড়বে। দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে।

সম্প্রতি আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রপ্তানি আয় না বাড়ায় দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘ মন্দাভাব থাকার পর গত অর্থবছর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তার পরও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে চাপ পড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১.৬১ শতাংশ। গত ৯ মাসে আমদানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.১৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত ১০ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয় ১০ শতাংশ। গত অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের গত এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন এক হাজার ৩৩০ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অন্যদিকে গত ২৯ মে শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১২৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এক মাস আগে গত ৩০ এপ্রিল যা ছিল তিন হাজার ২১২ কোটি ২৮ লাখ ডলার। ফলে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার।

Source -Kaler Kantho.

About Author

Business Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.