NewIncredible offer for our exclusive subscribers!Read More
Asia Business Economy বাংলা

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন, খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে

  • May 30, 2019
  • 1 min read
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন, খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে

দেশে চলতি দশকের শুরুর দিক থেকে অস্বাভাবিক উত্থান হয়েছিল জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পের। পুরনো ও অভিজ্ঞদের পাশাপাশি অনেক নবীন উদ্যোক্তাও রাতারাতি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সম্ভাবনাময় নতুন শিল্প বিবেচনায় এ খাতে উদার হস্তে বিনিয়োগ করে ব্যাংকগুলোও। কিন্তু দশক শেষ হওয়ার আগেই বিপর্যয়ে পড়ে দেশের জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্প, সে সঙ্গে বিপাকে এ খাতে বিনিয়োগ করা ব্যাংকগুলোও। বণিক বার্তা।

২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির খাতায় নাম লিখিয়েছে ২ হাজার ৬৮০ কোটি টাকার ঋণ, যা এ খাতে বিনিয়োগের ১৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। যদিও একই সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে গড় খেলাপির হার ছিল ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে উচ্চ খেলাপির হার দেশের ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, খেলাপি ঋণের হারের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেলাপিগ্রস্ত খাত হলো ছোট, মাঝারি ও কুটির (এসএমই) শিল্প। এ খাতে ব্যাংকের বিনিয়োগের ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ খেলাপি। এছাড়া ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (বাণিজ্যিক ঋণ) খাত ১৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে তৃতীয় স্থানে, ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে কৃষি খাত চতুর্থ স্থানে রয়েছে। পঞ্চম স্থানে থাকা সড়ক ও যোগাযোগ এবং ষষ্ঠ স্থানে থাকা কৃষিভিত্তিক শিল্পে খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১১ দশমিক ৮৩ ও ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

কম উদ্যোক্তা এবং বৃহৎ শিল্প হওয়ায় জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে খেলাপি ঋণের হার বেশি বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ব্যাংকঋণের পরিমাণও বড়। ফলে দু-চারজন উদ্যোক্তা খেলাপি হলেই এ খাতের খেলাপি ঋণের হার বেড়ে যায়। বৈশ্বিক কারণে দেশের জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্প বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। তবে এর মধ্যে দুয়েকজন যে প্রতারক নেই এটিও বলা যাবে না। সঠিক গ্রাহক চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর দায়দায়িত্ব রয়েছে। ব্যাংকাররা সতর্ক থাকলে অসৎ মানুষ ঋণ পাওয়ার কথা নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ ছিল ৯ লাখ ১১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এ ঋণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করা হয়েছে ট্রেড অ্যান্ড কমার্সে। খাতটিতে ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ ছিল ২ লাখ ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকঋণের ২২ দশমিক ৪ শতাংশই বিতরণ করা হয়েছে ট্রেড অ্যান্ড কমার্সে। বিতরণকৃত ঋণ ও খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে এ খাতই শীর্ষে। মোট ২৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে ট্রেড অ্যান্ড কমার্স খাতে, যা দেশের মোট খেলাপি ঋণের ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ।

খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ খাত হলো তৈরি পোশাক শিল্প। এ খাতে ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ আছে ১ লাখ ৭ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি, যা দেশের মোট খেলাপি ঋণের ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে তৈরি পোশাক খাতে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে খেলাপির হার ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

মোট বিতরণকৃত ঋণ ও খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম খাত হলো বৃহৎ শিল্প। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃহৎ শিল্পে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ১৬০ কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। একই সময়ে এ খাতে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ১১ হাজার ৭০ কোটি টাকা। এটি দেশের মোট খেলাপি ঋণের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে বৃহৎ শিল্পের ঋণের ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ রয়েছে ব্যাংকগুলোর খেলাপির খাতায়।

ঝুঁকি বেশি ও বিপদে পড়লে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা না থাকায় দেশের এসএমই খাতে খেলাপি ঋণের হার কিছুটা বেশি বলে মনে করেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান। তিনি বলেন, অস্বাভাবিক লাভের উদ্দেশ্যে কিছু নবীন উদ্যোক্তা জাহাজ নির্মাণ ও ভাঙা শিল্পে বিনিয়োগ করেছে। ব্যাংকও বুঝে না বুঝে ওই উদ্যোক্তাদের ঋণ দিয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে এ শ্রেণীর উদ্যোক্তারা খাপ খাওয়াতে পারেননি। ফলে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি পুরো খাতকেই তারা বিপদে ফেলেছেন। কিছু উদ্যোক্তা ব্যাংকঋণ নিয়ে জমি কিংবা বাড়ি-গাড়ি কিনেছেন। এটিও দেশের জাহাজ ভাঙা শিল্পের বিপদের কারণ।

আনিস এ খান বলেন, এসএমই ও ট্রেডিংয়ে ঝুঁকি অনেক বেশি। এ কারণে এ দুটি খাতে খেলাপি ঋণের হারও বেশি। তবে এসএমইসহ সৎ উদ্যোক্তারা বিপদে পড়লেও ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু অসৎ ব্যবসায়ীরা বিলাসী জীবনযাপন করলেও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেন না। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন কার্যকর করার জন্য ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার।

Source – Amader Shomoy.

About Author

Business Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.