ঈদে চাঙ্গা রেমিট্যান্স প্রবাহ, ২৪ দিনে এসেছে ১৩৫ কোটি ডলার

0
248

ঈদ সামনে রেখে দেশের রেমিট্যান্স আয় বাড়ছে। চলতি মে মাসের ২৪ দিনেই ১৩৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদ ঘনিয়ে এলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এর ফলে একক মাস হিসেবে মে মাসেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল জানুয়ারি মাসে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ এমনিতেই ভালো ছিল। রোজা এবং ঈদ সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছে প্রবাসীরা। সে কারণেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। অর্থবছর শেষে এবার রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা করেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মে মাসের ২৪ দিনে (১ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত) ১৩৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে প্রথম চার দিনে এসেছে ১১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ৭৪ লাখ ডলার, বেসরকারি ৪০টি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০১ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এক হাজার ৩৩০ কোটি ৩০ লাখ ডলার (১৩.৩০ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। মে মাসের ২৪ দিনের ১৩৫ কোটি ডলার যোগ করলে চলতি অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৪৬৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। অর্থবছরের বাকি এক মাস ছয় দিনে দেড় বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে। সে হিসেবেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এবার রেমিট্যান্স ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা, যা ছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭.৩২ শতাংশ বেশি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। রেমিট্যান্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১২৪ কোটি ১০ লাখ ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পরও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে অবস্থান করছে মূলত রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ—এই ৯টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। স্থানীয় বাজারে ডলারের উচ্চমূল্য এবং হুন্ডি ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। আগের বছর একই দিন ডলার-টাকার বিনিময়হার ছিল ৮৩ টাকা ১০ পয়সা ।

Source – KalerKantho.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here